করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত‍্যু : শোকস্তব্ধ জামালপুর

17th September 2020 9:30 pm বর্ধমান
করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত‍্যু : শোকস্তব্ধ জামালপুর


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ ব‍্যানার্জী ( জামালপুর ) : 

করোনা অতিমারির মধ্যেও রোগী স্বার্থে পঞ্চায়েত অফিসের চেম্বারে তাঁর ছিল নিয়মিত হাজিরা।তিনি হলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ২ পঞ্চায়েতের চিকিৎসক অনুপ কুমার ঘোষ। সেখানে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা শেষকরে তিনি এক একদিন পৌছে যেতেন এক এক গ্রামে। সেখানকার সাধারণ মানুষজনকে তিনি  করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার উপায় জানিয়ে দিতেন । সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দিয়ে চলেছিলেন। কিন্ত চিকিৎসক অনুপ ঘোষও শেষপর্যন্ত রেহাই পেলেন না করোনার থাবা থেকে । করোনা তারও প্রাণ কেড়ে নিল ।  বর্ধমানের গাংপুরের বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনা যোদ্ধা চিকিৎসক অনুপ ঘোষের এমন অকাল মৃত্যুতে জামালপুরবাসীর পাশাপাশি শোকস্তব্ধ
জামালপুরের চিকিৎসক মহল । শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার পরিজনও । প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক অনুপ ঘোষের আদি বাড়ি জামালপুর ব্লকের আঝাপুর পঞ্চায়েতের ভেড়িলি  গ্রামে। বর্তমানে তিনি শহর বর্ধমানের   বাড়িতে স্বপরিবার বসবাস করতেন ।  ৫০ উর্ধ্ব অনুপবাবু দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর 
২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মেডিকেল অফিসার (এইচ এম ও) পদে দায়িত্ব সামলে আসছিলেন । জামালপুর ব্লক স্বাস্থকেন্দ্রের বিএমওএইচ চিকিৎসক আনন্দ মোহন গড়াই বলেন , অনুপ ঘোষ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থতা বোধ করছিলেন । কিন্তু তিনি পরিবারের লোকজন বা পঞ্চায়েত কর্মী কাউকেই কিছু জানান নি ।বুধবার বর্ধমানের কোভিড পরিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে তিনি  পরীক্ষা করান । রিপোর্ট পজিটিভ আসলে তিনি আতঙ্কে আড়ও অসুস্থ  হয়ে পড়েন ।  ওই দিনই অনুপবাবুকে বর্ধমানের গাংপুরের বেসরকারী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই  বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি মারা যান । করোনা ধরা পড়ায় আতঙ্কেই অনুপবাবু হার্টফেল করেছেন বলে মনে করছেন সহকর্মীরা ।  ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন , করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষজনের মধ্যে সচেতনতা জাগানোর কাজে চিকিৎসক অনুপ ঘোষ গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ।করোনা অতিমারির মধ্যেও পঞ্চায়েত অফিসের চেম্বারে রোগী দেখা সেরে তিনি গ্রামে গ্রামে যেতেন ।প্রশাসনের সহযোগী হিসাবে তিনি  সেখানকার সাধারণ মানুষজনকে  করোনা নিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বার্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন । 
করোনা আক্রান্ত হয়ে এমন এক করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকের মৃত্যু সত্যি দুঃখের । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।